ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী কি চায় পুরুষের কাছে

লিঙ্গের সাইজ কত বড় হওয়া দরকার?

আপলোড সময় : ০৮-০৮-২০২৩ ০৬:১৫:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৮-০৮-২০২৩ ০৬:১৫:১৯ অপরাহ্ন
লিঙ্গের সাইজ কত বড় হওয়া দরকার? সেক্স ফাইল ছবি
প্রায় অর্ধেক প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মনে করেন তাদের পুরষাঙ্গ অনেক ছোট । বিশ্বজুড়ে সাধারনত উত্তেজিত অবস্থায় পুরুষ লিঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে ৪.৭ থেকে ৬.৩ ইঞ্চি। অনেকের মতে পেনিসের গড় দৈর্ঘ্য ৫.১-৫.৯ ইঞ্চি। তবে লিঙ্গের আকার ব্যাক্তি এবং অঞ্চলভেদে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। বিরল ক্ষেত্রে পারিবারিক (জেনেটিক) এবং হরমোন জনিত সমস্যার কারনে ৩ ইঞ্চির চেয়েও অনেক ছোট লিঙ্গ দেখা যায়। চিকিত্সা শাস্ত্রে এটি মাইক্রোপেনিস নামে পরিচিত। তবে পেনিস ৪ (চার) ইঞ্চি হলেই স্ত্রীকে অর্গাজম দিতে কোনো প্রকার অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অনেকের ক্ষেত্রে প্রোষ্টেইট ক্যান্সার অপারেশান সহ নানা রোগের কারনে লিঙ্গের আকার ছোট হয়ে যেতে পারে।

লিঙ্গ বড় হওয়ার ক্ষেত্রে দেশ ভেদে ভিন্ন হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মেক্সিমাম ১৮ বছর পর্যন্ত লিঙ্গ বড় হয়। লিঙ্গ নরম থাকা এটা কোন রোগ নয়, তবে দুঃচ্চিন্তার কারনে এটা হতে পারে। সব সময় নিজেকে চিন্তা মুক্ত রাখবেন। আর আপনার লিঙ্গের আকার নিয়ে কোন চিন্তা করবেন না। যৌন মিলনের ক্ষেত্রে লিঙ্গের আকার কোন সমস্যা না।

পরিতৃপ্তিঃ যৌন মনন্তত্ত্ব বড়ই বিচিত্র। কিছু কিছু পুরুষ গভীর ভাবে বিশ্বাস করে যে তারা পৃথিবীর যেকোন নারীকে সহবাসে পরিতৃপ্ত করতে সক্ষম, কিন্তু এর বিপরীত চিত্রও আছে, যেখানে দেখা যায় অনেক পুরুষেই এই ভয়ে ভীত যে নারিকে দৈহিক পরিতৃপ্তি দেবার ক্ষমতা তার নেই। দু’দলেরই বিশ্বাস যে, নারীকে সহবাসে পরিতৃপ্তি দানের ক্ষমতা পুরোপরি পুরুষের লিঙ্গের উপর নির্ভর করে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সফল সহবাস এবং এই বদ্ধমূল বিশ্বাস কি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত? যতবার নারীর সঙ্গে সহবাসে লিপ্ত হবে ততবার পুরুষ একইরকম পরিতৃপ্তি নিজে অনুভব করবে এবং নারীকেও সেই পরিতৃপ্তি দিতে পারবে এমন ধারণা নিতান্তই ভ্রান্ত ও অমূলক, আবার নিজেদের যৌন সক্ষমতা সম্পর্কে পুরুষের অহেতুক দুশ্চিন্তাও তাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর, এবং তা পুরুষ ও নারীর মিলনে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।

এইসব ভীতির অধিকাংশেরই মূলে যে কারণ বর্তমান তা হল অজ্ঞতা। এই অজ্ঞতা নারী ও পুরুষ দুজনেরই মানসিকতার প্রভূত ক্ষতিসাধন করতে পারে এবং চরমানন্দ অর্জনের ফলেও তা বিশাল প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রায় প্রত্যেক পুরুষই তার জীবনের কোনও না কোনও এক সময়ে নিজের লিঙ্গের আকার নিয়ে চিন্তা করতে দেখা যায়। ছোট ছোট ছেলেদের অনেককেই দেখা যায় তাদের কার লিঙ্গ আকারে কত বড় তাই নিয়ে নিজেদের মধ্যে গভীর ভাবে আলোচনা করতে। তেমনই যেসব পুরুষের লিঙ্গ আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট তাদের অনেকেই অহেতুক এই দুশ্চিন্তায় ভোগেন যে হয়ত বিবাহিত জীবনে তিনি তার জীবনসঙ্গিনীকে যৌন পরিতৃপ্তি দিতে পারবেন না আর তার লিঙ্গের ক্ষুদ্রাকৃতিই এই অক্ষমতার জন্য দায়ী।

এখানে অনিবার্যভাবে চিকিৎসকদের প্রসঙ্গ এসে পড়ছে—আপামর জনসাধারণের কাছে যৌনজ্ঞানকে সবরকমের সংস্কারমুক্ত অবস্থায় পৌঁছে দেওয়া যাদের অন্যতম নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব। ১৯৫০-এর দশকে আমেরিকার এক বিখ্যাত মেডিক্যাল কলেজের মনসমীক্ষণ বিভাগের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, শুধু সাধারণ মানুষই নয়, বহু অভিজ্ঞ চিকিৎসকও এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী যে, সহবাসের সময় নারীকে পুরুষের পরিতৃপ্তি দানের প্রশ্নটি পুরুষের লিঙ্গের আকৃতির ওপর নির্ভরশীল।

ইতিহাসের দিকে একবার পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে লিঙ্গের আকার সম্পর্কে পুরুষের দুশ্চিন্তা যুগ যুগ ধরে মনুষ্য সমাজে প্রবহমান। মেক্সিকোর কিছু কিছু অঞ্চলে খননকার্য চালিয়ে প্রত্মতাত্ত্বিকের এমন অনেক মাটি ও পাথরের তৈরি লোকলিল্পের নিদর্শন পেয়েছেন যাদের গঠন দেখে বোঝা যায় যে আসিসযুগেও সহবাসকালে নারীকে পূর্ণ পরিতৃপ্তি দানের চিন্তা পুরুষের মনকে আচ্ছন্ন করে রাখত। মাটির তৈরি এরকম অসংখ্য নিদর্শন সেখানে পাওয়া গেছে গেছে যেগুলো বর্ধিত আকারের পুরুষের লিঙ্গের প্রতিরূপ।

রেনেশাঁসের যুগে সমাজের ওপরতলায় কিছু শৌখীন মানুষ এক ধরনের কৃত্রিম আবরণ দিয়ে তাদের লিঙ্গ ঢেকে রাখত এবং এর ফলে তাদের লিঙ্গের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে হত।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে, যৌনতার ক্ষেত্রে নারীর কাছে পুরুষাঙ্গের আকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু গবেষণার পর এ ধারণার সঙ্গে একমত হতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তারা জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে নারী কি চায় পুরুষের কাছে।

সুইজারল্যান্ডের এক দল গবেষকের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় ‘জার্নাল অব সেক্সুয়াল মেডিসিন’-এ। তারা ১০৫ জন নারীর ওপর জরিপ চালান। দেখা গেছে, যৌনতায় তাদের কাছে পুরুষাঙ্গের আকার সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত হয়েছে।

গবেষকরা জানান, জন্মের সময় ছেলেদের ০.৩-০.৫ শতাংশ ত্রুটিপূর্ণ পুরুষাঙ্গ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। জন্মের প্রথম বছরের মধ্যে সার্জারির মাধ্যমে তা ভালোও করা যায়।

৪ থেকে ৬ ইঞ্চি হচ্ছে বেশিরভাগ পুরুষের উত্তেজিত লিঙ্গের দৈর্ঘ্য। এর চেয়ে ছোট হলে যৌনমিলনের কোন কোন আসনে যোনিতে লিঙ্গ চালনা কঠিন হতে পারে। বেশি বড় হলেও আবার সঙ্গিনী ব্যাথা পেতে পারে।

পুরুষের লিবিডো বা কামচেতনা এবং যৌনক্ষমতা আনুপাতিক—এ এক বহুপ্রচলিত বিশ্বাস। এই বিশ্বাসকে যারা ব্যাখ্যা করে তারা বলে বেড়ায় যে পুরুষাঙ্গের আকার যত বড় হবে যৌন প্রেরণাও ততই বাড়বে। একইভাবে লিঙ্গোত্থান ঘটানো ও তা বজায় রাখাও পুরুষাঙ্গের বর্ধিত আকারের ওপর নির্ভরশীল।

কোন ব্যক্তি কি পরিমাণ যৌন প্রেরণায় অধিকারী মনস্তাত্ত্বিক পরিভাষায় তা বর্ণনা করতে লিবিডো শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যৌন প্রেরণা হল বংশপরস্পরায় প্রাপ্ত যাবতীয় সহজাত অনুভূতি, হরমোন বা গ্রন্থি নিঃসরণ সংস্ক্রান্ত যাবতীয় তাগিদ এবং চেতন ও অচেতন নির্বিশেষে সবরকম মানসিক অনভূতির এক জটিল সংমিশ্রণ। এইসব উপাদানের প্রত্যেকটিই লিবিডোর ওপর পুরুষাঙ্গের আকারের কোনও প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেই।

জরিপে অংশ নেওয়া ১৬-৪৫ বছর বয়সী নারীদের কাছে পুরুষাঙ্গের স্বাভাবিক চেহারাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক, স্বাভাবিক আকৃতি, স্বাভাবিক অণ্ডকোষই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে উঠে এসেছে।

ফ্যাশন ম্যাগাজিন কসমোপলিটানের এক জরিপে অংশ নিয়েছেন ১১ শ পাঠক যার অধিকাংশই নারী। এ জরিপে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যে নারীর বয়স এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা যত বেশি, তার কাছে সঙ্গীর পুরুষাঙ্গের আকার তত কম গুরুত্বপূর্ণ। মূলত অভিজ্ঞতাই তাদের এ সত্য উপলব্ধিতে সাহায্য করেছে।

পুরুষাঙ্গের আকার সম্পর্কে যেসব ভ্রান্ত ধারণা দেখা যায় তাদের অধিকাংশেরই মুলে রয়েছে পুরুষাঙ্গের দুটি স্বাভাবিক অবস্থা। প্রথমটি হল শিথিল অনুত্থিত লিঙ্গ, এবং দ্বিতীয়টি হল উত্থিত লিঙ্গ। যৌন বাসনা চালিত হলে লিঙ্গের উপরিভাগ বরাবর দুটি ‘কর্পাস ক্যানভারনোসার’ মৌচাক সদৃশ্য ফাঁপা টিস্যু বা কলা এবং লিঙ্গের নিম্ম ভাগে অবস্থিত কর্পাস স্পঞ্জিয়োসাম—এর থলথলে টিস্যু যখন রক্তে ভরে ওঠে তখনই পুংলিঙ্গ বা পুরুষাঙ্গের ইরেকশান অর্থাৎ উত্থান হয়।

শিথিল অবস্থায় পুরুষাঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য তিন থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি হয়ে থাকে। উত্থিত অবস্থায় পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য আরও দুই থেকে চার ইঞ্চি বেড়ে যায়। কিন্তু যেসব পুরুষাঙ্গ আকারে ক্ষুদ্র সেগুলো শিথিল অবস্থায় স্বাভাবিক পুরুষাঙ্গের তুলনায় অনেক বেড়ে যায় এবং তা দৈর্ঘ্য দ্বিগুণও হয়ে থাকে। শিথিল অবস্থায় যেসব পুরুষাঙ্গের আকার উত্থিত অবস্থায় চাইতে বড় হয় (তিন থেকে চার ইঞ্চি দৈর্ঘ্য), উত্থান হলে আনুপাতিকভাবে তাদের বৃদ্ধি হয় অনেক কম ( উত্থিত অবস্থায় দুই বা আড়াই ইঞ্চি বৃদ্ধি পায়) এইভাবে ছোট ছোট পুরুষাঙ্গের মধ্যে যে পার্থক্য তা যৌন ক্ষমতা চালনার সঙ্গে হ্রাস পায়। উত্থিত অবস্থায় পুরুষাঙ্গের গড় মাপ হল সাড়ে পাঁচ থেকে সাড়ে ছয় ইঞ্চি (মূল থেকে অগ্রভাগ পর্যন্ত)।

এমনকি ৩৩ জন পুরুষ সার্জারির মাধ্যমে পুরুষাঙ্গে আকার ছোট করে নিয়েছেন বলেই এ গবেষণায় উঠে এসেছে।

অতএব দেখা যাচ্ছে যে, ওপরে বর্ণিত এইসব তথ্য সেই অলীক ও ভ্রান্ত বিশ্বাসকে খন্ডন করতে সমর্থ, যে পুরুষের লিঙ্গের আকার যত বড় হয় সে তার শয্যাসঙ্গিনীকে সহবাসকালে ততই অধিক পরিমাণে পরিতৃপ্তি প্রদানে সমর্থ হবে। আকারে অস্বাভাবিক দীর্ঘ পুরুষাঙ্গও সহবাসকালে যেকোন নারীর পক্ষে যন্ত্রাণার কারণ হতে পারে, অবশ্য সেই নারী যদি এই যন্ত্রাণাকে হাসিমুখে গ্রহণ করে ত সে ক্ষেত্রে বলার কিছু নেই। তাঁকে আনন্দ ও বেদনার এক মিশ্র অনুভূতি হিসেবে বর্ণনা করা চলে ।এক্ষেত্রে নারীর উরু ওপরে ওঠালে অথবা তার পিঠ ও কোমরের মাঝামাঝি জায়গায় একটি বালিশ রাখলে তা উভয়ের পক্ষেই সুবিধাজনক হবে।

যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন খাবার বড়ি, ক্রিম, লকিং মেশিন এবং অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে পুরুষরা তাদের লিঙ্গের আকার পরিবর্তনের চেষ্টা করে আসছে । আর প্রায় একশত বছরের বেশি সময় ধরে এর জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা অথবা চেষ্টা করেও লিঙ্গের আকার পরিবর্তনে তেমন একটা ভাল ফলাফল/আবিষ্কার এখন পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি । কারণ সত্যিকার অর্থে খাবার বড়ি, ক্রিম, লকিং মেশিন ইত্যাদির কোনটিই কার্যকর হয়না। বরং এ রকম চেষ্টার ফলে অনেক পুরুষই লিঙ্গত্থান সমস্যাসহ নানবিধ যৌন জটিলতায় পতিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত ।

ডক্টর মাইকেল ও’লেয়ারী (প্রফেস্যার, হাবর্ড মেডিক্যাল স্কুল, ইউরোলজিষ্ট, ব্রিগহাম এন্ড ওমেন্স হসপিটাল ইন বোষ্টন) বলেন, “বিশ্বাস করুন, আমি যদি জানতাম কি করে নিরাপদে এবং সত্যিকারেই লিঙ্গের আকার বড় করা যায় তাহলে আমি তা প্রেসক্রাইব করে কোটিপতি হয়ে যেতাম। কিন্তু আমি এটা জানিনা ।”

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ